আত্মশুদ্ধি
আমার বোধগুলো যেন সুন্দরের প্রতি খুব ঋণী। যা দেখি সব যেন ফুটন্ত ফুলের মতো লাগে, প্রেম জাগে, লাগে মায়া, আবেগে আপ্লুত হই যখন সুন্দরকে খুঁজি প্রতিটা প্রাণে, প্রতিটা শিল্পে, প্রতিটা সৃষ্টিতে, প্রতিটা বোধে, প্রতিটা সুখের কাননে। ফুলেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মায়ের কোলে সুন্দর, একটি শাবকের প্রথম হাঁটতে শেখার দৃশ্যটা সুন্দর, সুন্দর একটি অনাহারীর আহার গ্রহণ, একটি শিশুর হাসি মাখা মুখ। সুন্দরকে আমরা ছুঁতে পাই হৃদয়ের অনুভূতি দিয়ে, এবং বোধ থেকে বিচার করি সুখ আর দুঃখকে।
সব সুন্দরই সুন্দর হয় না বরং চিরায়ত কিছু সত্য যা সুন্দর হবার কথা, কিন্তু আমাদের বোধে সুন্দর অনুভূতি জাগায় না, উদাহরণে বলা যেতে পারে প্রেমের তরে একটি ফুলের আত্মবিসর্জনের কথা, কোনো শিশুর হাতের খেলনা হয়ে খেলার ছলে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া ফুলটার ত্যাগের মহিমান্বিত একটা মর্মান্তিক গল্প, এগুলো মনে সুন্দর বোধ জাগায় না বরং এগুলোকে পৈশাচিক সুখের উপাদান মনে হয়। একটা প্রাণ সে যে সত্ত্বাধিকারী বা গোত্রীয় হোক, সে প্রাণের অনুভূতি সবারই সমান, সবাই তার জীবনের পূর্ণ স্বাদ পেতে চায়, মৃত্যু অনিবার্য হলেও সেটা স্বাভাবিকভাবে হওয়াই সবার প্রত্যাশা, জীবনের মানেটা সবার কাছেই সমান। সাম্যবাদের কথা বলছি, কিন্তু একটা মুহূর্তে বিবেকের কাঠগড়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি, "সাম্যবাদীতার সমতা বণ্টনে আমি কতটুকু দৃঢ়?" এই দিক থেকে প্রতিটি প্রাণের প্রতি সমদৃষ্টি আমার দীক্ষিত হবার পথে প্রধান পাথেয় হিসেবে মস্তিষ্ককে আন্দোলিত করছে। একটি শিশুর মুখের হাসি, একটি ফুলের আগত কলি কিংবা ফলের মুকুল! - সত্যিই এ যেন মধুমাখা সুন্দরের রূপকাশ্রিত পদ। যে সুন্দর দৃষ্টিকে নান্দনিক করে, যে সুন্দর অনুভূতির চর্চা; প্রাণকে উজ্জীবিত করে প্রতিটি সুন্দরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগাতে, এ সত্যিই এক আত্ম-উপলব্ধি ও নিজেকে খুঁজে পাবার প্রকৃত পথ।
Comments
Post a Comment