সন্দিহান মনুষ্যত্ব
দার্শনিক দেকার্ত এর মতে, "ইন্দ্রিয় যেহেতু ভ্রম দ্বারা বিভ্রান্ত হতে পারে, সেহেতু ইন্দ্রিয়ও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়, সেহেতু যুক্তি দিয়ে সত্যান্বেষণ করতে চাইলে বাস্তবতা সম্পর্কে যেকোনো বিশ্বাসকেই সন্দেহ করতে হবে"। আবার সক্রেটিস বলেছেন, "দুনিয়াকে জানার আগে নিজেকে জানতে হবে, যার একমাত্র মাধ্যম হল যৌক্তিক চিন্তা ভাবনা। মানুষের দুটো অংশ থাকে, যার প্রথমটি দেহ ও দ্বিতীয়টি আত্মা, আত্মায় আবার দুটো অংশ থাকে, এক হচ্ছে অযৌক্তিকতা, যা আমাদের আবেগ দ্বারা গঠিত এবং অপরটি হচ্ছে যৌক্তিকতা, যা আমাদের প্রকৃত রূপ। যৌক্তিকতা আমাদের মানসিকতার মানদণ্ড, যেখানে প্রশ্ন ওঠে প্রকৃত মানুষের সংজ্ঞা কী হতে পারে এবং আমাদের মানসিকতা সত্যিই মানুষের প্রকৃত সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হতে পেরেছে কি না?"
বিবর্তন হওয়া প্রাণীকুলে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মাধ্যমই মানসিকতা, এই মানসিকতা আমরা যার মাঝে দেখতে পাই, তাকেই মহা বিজ্ঞ ও প্রকৃত মানুষ হিসেবে জ্ঞানে বোধ করি, অনুসরণ করি। কারণ আমরা সবাই প্রকৃত মানুষ হতে চাই। মানুষ হওয়া যায় না, মানসিকতা চর্চা করতে হয়, যে যতদিন এই চর্চা করবে, সে ততদিন মানুষ হিসেবে আখ্যা পাবে আর যখন ভঙ্গ করবে, তখন নিন্দিত হবে অমানুষ হিসেবে। সত্যকে সত্য বলা আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলার শিক্ষা আমরা তখনই পাব, যখন বাস্তবতা সম্পর্কে সকল বিশ্বাসকেই আমরা সন্দেহ করতে পারব, যখন মানসিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারব সত্যের সন্ধানে।
Comments
Post a Comment