সভ্যতার বিবর্তন
প্রতিটি সম্প্রদায়ের নিজস্ব সংস্কৃতি থাকে, সংস্কৃতি বিনা কখনো সম্প্রদায় গড়ে ওঠে না, প্রতিটি সংস্কৃতি বিবর্তনের ছোঁয়ায় বিবর্তিত হতে হতে সভ্য হয়ে ওঠে, পরিশেষে সভ্য হয়ে ওঠা উৎকৃষ্ট সংস্কৃতিটুকু অবশ্যই সুন্দরের রুচিবোধ জাগাবে। প্রতিটি সংস্কৃতিকে যার যার জায়গা থেকেই বোধে ধারণ করা উচিত, প্রতিটি সংস্কৃতি এক একটি দর্শন, এক একটি দৃষ্টিকোণ, এক একটি ভাবনার সমাহার। কিন্তু যারা অপর সংস্কৃতিকে অপ বলে জ্ঞান করে, তারা সংস্কৃতির বোধ থেকে সাম্প্রদায়িক নয়, বরং এরাই অধার্মিক। এরাই বাতাসে ছড়ায় ঈর্ষা আর অপ-সংস্কৃতির বীজ, যা ভিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে সম্প্রীতি অপেক্ষা বিদ্বেষ বেশি জাগায়।
আমাদের একটি সোনালী সময় ছিল, সুন্দর সংস্কৃতি ছিল, ছিল ভৈরবীর মতো বোধ, যে বোধ লিঙ্গভেদে ভাবতে শেখায়। ছিল এমন একটি শিক্ষা, যা সকল প্রাণে বা বস্তুতে নিজেকে সমর্পণ করতে শেখায়, যে দৃষ্টি - নগ্নতায় কখনো যৌনতা আবিষ্কার করেনি, এমন একটি পরিবার যেখানে যৌথ বন্ধন বজায় থাকত অটুট: বংশপরিক্রমায়। অথচ এ সংস্কৃতি, এ সুর, এ চর্চা এ অঞ্চলেরই, আমরাই গড়েছি রাগের কাঠামো। বাংলার বায়ুপ্রবাহে আমি শঙ্খসুর শুনতে পাই, যে কণ্ঠ আমার আদিপুরুষের, এ মাটিতে আমি রক্তের ঘ্রাণ পাই, যা আমারই আদি পুরুষদের, যারা ধার্মিক ছিলেন, যারা ধর্মান্তরিত না হওয়ার অভিযোগে খুন হয়েছিলেন এ মাটিতেই, আর এই সমস্ত খুনের উপরই তিলে তিলে গড়ে উঠেছে আজকের নব্য সভ্য বৈশ্বিক সংস্কৃতি। সংস্কৃতির এই পরিবর্তনের মাধ্যমে যেমন আমরা একটা নব্য সভ্যতা পেয়েছি, এরই সাথে হারিয়ে ফেলেছি অনেক সভ্যতা ও তাদের সংস্কৃতি এবং তাদের সংখ্যার পরিধিটুকুও ছোট নয়।
Comments
Post a Comment