পরিবাথার প্রথা ও আত্মোৎসর্গ
আমাদের একজন বিজ্ঞানী আছেন, ড. জামাল নজরুল ইসলাম স্যার, যিনি জগৎ খ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং-এর সহপাঠী, বন্ধু এবং রুমমেটও ছিলেন। ড. জামাল নজরুল ইসলাম একটি বই লিখেছিলেন "The Ultimate Fate of the Universe" নামে ১৯৮৩ সালে এবং ১৯৮৮ সালে মানে ৫ বছর পর স্টিফেন লিখেন "A Brief History of Time", যা স্টিফেনকে জগৎ বিখ্যাত করেছে। নজরুল ইসলাম স্যারের বড় মেয়ের বিয়েতে স্কটল্যান্ডের একজন বিজ্ঞানী ছিলেন স্যারের বাসায়, তখন ওনার ছোট মেয়ে তার বান্ধবীদের সাথে হারমোনি নিয়ে গান রচনা করছে, হাসি ঠাট্টা করছে, যে দৃশ্যটা খুব গভীরভাবে আবেগাপ্লুত করেছিল স্কটল্যান্ডের বিজ্ঞানীকে এবং তিনি স্যারকে ডেকে বলছেন, "১০০ বছর আগে আমাদের সংস্কৃতিতে, আমাদের সমাজে, আমাদের জীবন ধারায় এমন অবস্থা ছিল, একসাথে বসে আমরা গান করতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটা আমরা স্থায়ীভাবে হারিয়ে ফেলেছি"। মূলত, পশ্চিমে আরো ১০০ বছর আগেই হারিয়ে গেছে পরিবার প্রথাটি। এই ভারতীয় উপমহাদেশের পরিবার প্রথা এবং ইসলামিক পারিবারিক আচারে যে ঐতিহ্য এবং সৌহার্দ্য ফুটে ওঠে, তা যেন প্রেমেরই নামান্তর, অপর দিকে পশ্চিমে মুক্ত পুঁজিবাদের অবাধ বিকাশের প্রতি অনুরাগ এবং টিকে থাকার লড়াই মূলত একটা সময় পারস্পরিক বিশ্বাস, ভরসা বা মায়াময়ী আবেগের মাঝখানে দেয়াল তুলে দেয়। পশ্চিমে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ নামে এক প্রকার বিবাহ প্রথার বৈধতা আছে, যা ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোতে সরাসরি হারাম। জাপানেও দেখা যাচ্ছে পরিবারের প্রতি আগ্রহ, আবেগ বা মায়া তেমন কিছু ঠিক ততটা নেই, যতটা আমরা বাঙালিরা আশা করি, জাপানে বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে তরুণদের মাঝে, যা জাপান সরকারেরও মাথা ব্যাথার কারণ।
পরিশেষে স্যার নিজের লক্ষ টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে দেশে নিজের পরিবার নিয়ে দেশীয় সংস্কৃতিতে জীবনের শেষ সময়টুকু কাটাবেন বলে চলে এসেছিলেন বাংলাদেশে এবং নিজের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করে। ড. জামাল নজরুল ইসলাম স্যার কাজ করতেন 'কসমোলজি' নিয়ে, যা মহাকাশ বিদ্যার একটা অংশ।
কে কখন কী সিদ্ধান্ত নিবেন তা ব্যক্তি কখনো আগে পরিকল্পনা করে রাখেন না, আবার রাখলেও পারিপার্শ্বিক চাপে পরিকল্পনামাফিক সিদ্ধান্তে অটুট থাকতে পারেন না, এ এক অদৃশ্য শক্তিরই যেন প্রভাব, যে শক্তির বলয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠে, অস্তিত্ব প্রকাশ করে মন ও আত্মা এবং প্রতিরূপ পায় ভাগ্য, নিয়তি বা কপাল শব্দগুলো।
Comments
Post a Comment