শক্তির সঞ্চরণ
একটি লেখায় লুকিয়ে থাকেন লেখক স্বয়ং এবং তার চিন্তা, রুচি, যাপনের অবস্থা, জীবনের প্রতি দৃষ্টি, বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা, শব্দের চয়ন ও ব্যবহার। বাক্যের প্রতিটি গঠনে যেন লুকিয়ে থাকেন লেখকের একেকটি মেজাজের আমেজ, যা পাঠককে হিপনোটাইজ করার মতো আঁকড়ে রাখে পাঠ্যে। জাদুকরী গল্পজালে বন্দি করে জ্ঞানের পথ দেখান লেখক। একটি লেখায় কেবল জ্ঞানই থাকে না, থাকে শিল্পগুণ, প্রাণবন্ততা, প্রাঞ্জলতা, ছন্দ, তাল, গল্প ও জীবন। একটি লেখা-ই যেন একটি ভাস্কর্য, যা হাজারটা দৃষ্টি, চিন্তা ও পরিকল্পনার জন্ম দেয়, দেয় একটা মৌলিক প্রাণের অস্তিত্বও, যেমনটা লেখক চাচ্ছেন। আবার একই লেখা একটি শিল্পও, যা প্রকৃত কোনো অর্থ বহন করে না। বরং এতে আছে একই ভাবের বিশেষ মাত্রা, যেমনটা আমরা সুরের রাগে খুঁজে পাই, যে রাগ ভাবেরই উচ্চ মার্গের প্রকাশ, যে ভাব বিভিন্ন সুরকার বিভিন্ন গানে প্রকাশ ঘটান। শিল্পও বিশেষ কোনো অর্থ বহনে বাধ্য নয়, বাধ্য বরং রাগের একটা মাত্রা বহনে, যে রাগের মাত্রা সমার্থক শক্তি যোগাবে দ্রষ্টার কল্পনার দৃশ্যপটে। ঠিক তেমনই একটি লেখা, যা বিশেষ অর্থ বহন করে না, বহন করে কিছু আত্মার, কিছু শক্তির, কিছু ব্যক্তিত্বের এবং এগুলো একত্রে আমরা আরোহণ করি জ্ঞান বলে।
Comments
Post a Comment